Tuesday, August 29, 2023

জঞ্জাল




আত্মীয়তা তো ওই ছেঁড়া বাতিল কাগজের টুকরোগুলোতেও অনুভব করি যেন... কই একেবারে কখনো বাইরে ফেলে দিতে পারিনা তো। কোথায় যেন বাঁধে... হ্যাঁ, কোথাও যেন বাধে। প্র্যাকটিকামের খাতায় স্থান না পাওয়া ওই অভাগা পাতা গুলোয় যেন কোনো এক বিশেষ আবেগ , কোনো এক মায়া অনুভব করি। তাই তাদের একটা আলাদাই ফাইল বন্দী করেছি। ওগুলো তোমার জঞ্জাল, আমার আবেগ। ওরা যেন জীবনের কোনো এক সুন্দর সময়ের শহীদ। ওরা কোনো কিছুকে যোগ্য ও সুন্দর করে নিজেদের নিমেষে বলি দিয়েছে। ওদের নিয়ে আবেগ থাকবে বৈকি...। আমার আবেগ আধাঁরে নিভৃতে কাঁদে... সেগুলো কথা বলে, ভারি মিষ্টি স্মৃতি উপহার দেয়, আর আমাকে ভালোবাসে, অনেকটা... যেমন টা কেউ কখনো বাসেনি। ভালোবাসা কোনো বস্তু হতেও অনুভব করা যায়, ব্যক্তি তো সর্বদা নাও থাকতে পারে জিবনে, পাশে...। এই এতটা পথ পেরিয়ে বুঝি , ছেঁড়া পাতায় যদি তোমাকে মনে না পড়ে, তাহলে সে পাতা আমার " জঞ্জাল "। আর শুধু ছেঁড়া পাতাই কেন, সেই ভাঙ্গা মন আজও কোথাও বেঁচে আছে। কখনো সেই ভাঙ্গা মনেই মনেপড়ে যায়... কে যেন কখনো আমাকে বলেছিল, - "জঞ্জাল!"।  জঞ্জাল নিভৃতে কেঁদেছিল...।🙂

Sunday, August 20, 2023

জীবন স্রোত...




সবাই দুর্দান্ত...!

হ্যাঁ, সবাই দুর্দান্ত ক্লান্ত...

জীবনের পথ চলায় আমরা সবাই এই কয়েকটা দিন একসাথে পা মিলিয়ে চলেছি। জীবন আবার চেনা ছকে চলে না। অনিশ্চয়তা থাকবেই, আর এর জন্যই জীবন টা হয়তো এত সুন্দর। অচেনা জনগুলো চেনা হতে হতে কোথায় যেনো হারিয়ে যায়। এই হারিয়ে যাওয়া অনেক প্রত্যাশার ছোট ছোট নদ নদী নিয়ে। জানি সকলেই সাগর পাড়ি দেবো একদিন , তবে প্রত্যাশার মোহনাস্থল গুলো ভিন্ন। এখন মন চায় কোনো একটা মোহনায় একসাথে সকলে পাড়ি দিতে। কিন্তু  জীবন কারো  প্রত্যাশী নয় । জীবন চায় আরও শাখা নদীর জন্য প্রস্তুত হতে, সে বলে আরও উপনদীর আগমনের কথা ও আরও নিস্বার্থ মিলনের কথা। আর হ্যাঁ, সর্বপরি সর্বদা আরও ভালোবেসে সামনে ভেসে যাওয়ার কথা। এই নদ নদীর জলে কত জনই না চাষাবাদ করে, নদীপাড় কেটে কিছু জল নিয়ে অন্য জলাশয়ে সঞ্চয় করে রাখে, জীবন যাপন করে। কত পরিবার সপরিবারে খেলা করে , সাঁতরে যায়, ডিম পাড়ে, কত জনই যে দাঁড়  টেনে জীবন দাঁড় করাতে চায় নদী তার হিসেব রাখে না, জীবনও তাই এই হিসেব রাখবে কীভাবে। জীবন জানে তার কিছু স্মৃতি ওই জলাশয়ে আছে সঞ্চিত। সময় হলে সেও বছরে দুই এক বার দুকূল ছাপিয়ে ওই স্মৃতির জলাশয়ে গিয়ে ঝাঁপ দেয়, সমৃদ্ধ করে আসে, সমৃদ্ধ হয়েও আসে। কোনো জীবন ভালোবাসে পার্বত্যভূমি, সে চায় ঝর্না হয়ে সশব্দে কোনো উঁচু পর্বত বা পাহাড় থেকে নিচে ঝাঁপিয়ে পড়তে। কেউ সমভূমি দিয়ে দূষিত ক্লান্ত যমুনা হয়ে প্রবাহিত হতে, কেউ আবার  ঘন জঙ্গলের মধ্য দিয়েই পরিশ্রুত বেশে নিঃশব্দে নেচে চলতে। ঠিক যেমন সকলের জীবনের লক্ষ্য  উদ্দেশ্য ছন্দ ও পছন্দ ভিন্ন। এই ভিন্নতাই বৈচিত্রতা, এটাই সুন্দর। সকলের বুকেই সূর্য উদয় হয়, একই ভাবে অস্তও যায়। স্বপ্ন আমাদের একটাই... ' সেই কোনো একদিন সকলে মিলে সাগরে একসাথে সূর্যোদয় দেখা '। কিন্তু সেই পথ এখনও অনেক দীর্ঘ। এখনও কত পূর্ণিমার চাঁদ সকলের বুকেই প্রতিফলিত হ‌ওয়ার আছে । তাই সমভূমিতে জীবনগুলোর সৌন্দর্য নিয়ে পরিচিত বা অপরিচিত লেখকজনেরা একটু বেশিই বাড়াবাড়ি করেন  । কিন্তু ওই সকলের আড়ালে, ঘন জঙ্গলের ভিতরে জীবনের বুকে প্রতিফলিত হ‌ওয়া চাঁদটার কথা, সেই জীবনের ভালোবাসার কথা কেউ জানতেও পারে না। পূর্ণিমাতে সে খুব বেশি আনন্দিত হয় না যেমন, অমাবস্যাতেও তার দুঃখ বন্ধু হয়ে পাশে বসে না আর ,  কোনো উপায় নেই। কখনো সে মৃত, কবরস্থ। ভালোবেসে সে বুকে আশ্রয় নেয় বালি , ও পাষাণ পাথর। আকাশে ভালোবাসার পূর্ণিমা ওই পাষাণ হৃদয়েই উঁকি  দিয়ে যায় , তখন কি তাকে বুকে ধরার সৌভাগ্য আর হয়? তা হয় না।  এই ভালোবাসায় কবিদের নজর লাগে না। তার ভালোবাসা থাকে অন্তরালে, অলিখিত, অলক্ষিত। তার প্রেমের ভাষাও আলাদা, এই ভালোবাসা স্বচ্ছ কাচের মতো পরিষ্কার । এই ভালোবাসা অনেক বেশি সম্মানের। অনেক বেশি গোপন, গোপন প্রতিফলনও। কালো মেঘ যদি তার ভালোবাসা ঢেকে দেয় কখনো, এই নদী চায়, এই জীবন চায় ওই কালো মেঘের প্রতিটা জলবিন্দু কে নিজের বুকে ধরে তার ভালোবাসার মুখে হাসি আনতে। আর তখন প্রকট যেন পূর্ণিমার স্বরূপ। সেই  প্রশান্তিতে ভরা পূর্ণিমা চাঁদ সেই বুকে ঢেলে দেয় তার ভালোবাসা। এই চাঁদের কলঙ্ক গুলো জীবন তার জীবন স্রোতে দেয় ধুয়ে , নিয়ে যায় ভাসিয়ে সাগরে চিরকালের মতো। যেখানে উদয়ীমান সূর্যদেবতার কাছে নিজের জীবন অঞ্জলী দিয়ে করে ভালোবাসার মঙ্গল কামনা , "সে যেন সর্বদা ভালো থাকে, সে যেনো সুখী হয়..." জীবন দেখায়, শেখায় ভালোবাসার স্বরূপ ত্যাগ, ত্যাগ স্বীকার। ভালোবাসায় ত্যাগস্বিকার, ত্যাগ স্বীকারই ভালোবাসা। 

ক্লান্তি জীবন কেড়ে নিলেও ভালোবাসা কেড়ে নিতে পারবে না, কোনো দিন না...

Wednesday, August 16, 2023

ভালোবাসার কী দরকার?

 





ভালোবাসার কী দরকার...


শুধু চোখে চোখের দেখা দেখা, আর? আর শুধু ভেবে চলা ,আর চলার পথে ভাবা...। এটাই ভাষা। সেই ভাষার কী বা দরকার যার জন্য শ্রোতার প্রত্যাশী হতে হয়? অন্যের উপস্থিতি থাকতে হয়। ভাষাহীন নিজেকে অনুভব করাই যায়। ভালো সেই শিশুও বাসে, যার এখনও ভাষা নেই। ভালোবাসাও ভাষার খোঁজ রাখেনি...

তাই, ভাষার কী দরকার?

আর, ভালোবাসার কী দরকার...

ভালোবাসা পাওয়ার কী দরকার...

বেলিফুল





এই পৃথিবী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ঠাসা, আবেগহীন প্রতিদ্বন্দ্বিতা। এখানে আবেগে লাল কালির দাগ। হৃদয়হীন রোবট গুলোর আনাগোনা চারপাশে। একবার মনেহয় হৃদয়টা খুলে রেখে রোবট হয়ে যাওয়ার উপায় থাকলে ভালো হতো। তাহলে অন্তত ভালো থাকতাম। হৃদয় থাকলেই যেমন সে অন্যকে তাতে রাখবে বলে উতলা হবে, আবার তেমনি আর এক অন্য হৃদয়ে ঠাই পাওয়ার জন্যও এটা অত্যন্ত ব্যাকুল হয়ে উঠবে। আর হৃদয়ের খোঁজে নতুন জায়গায় পাড়ি দেওয়ার সাহস আমার নেই, অবকাশও নেই আর। তাই, এটার এই জগতে এমনিতে দরকার ও বিশেষ নেই। কখনো কখনো অনুভব করি যেন এক মানসিক রোগ নিয়ে জন্মেছি। মাথার ভিতর কে যেনো একটা হাতুড়ি মারতে থাকে আমার স্বপ্নঘুম গুলোকে। সে স্বপ্নে অন্ধকার রাস্তায় আমি একা হাঁটতে থাকি। কুকুরগুলো ফুটপাতে শুয়ে মাঝে মাঝেই তুচ্ছ কারণে চিৎকার করে ওঠে। হাঁটতে থাকি... অন্ধকারে পেছন থেকে কে যেন আমাকে একধাক্কায় রাস্তায় ফেলে দিয়ে চলে যায়। উঠে বসি , উঠে দাঁড়াই, আবারও চলতে থাকি। বেশ কিছু পথ যাওয়ার পর আবারও ধাক্কা লাগে , আবারও পড়ে যাই। এই বার এক হালকা যন্ত্রণা অনুভব করি যেন। মুখতুলে দেখি এটা অন্য এক ধাক্কা, একখানা মিষ্টি মুখ, যেন অনেক দিনের চেনা, আমায় ভেতর থেকে জানে কেউ, বোঝে কেউ এমন একজন। উঠতে গিয়ে আবারও পড়ে যাই, কোথায় আঘাত লেগেছে বুঝতে পারছি না ঠিক। সে আমার হাত ধরে আমাকে তোলে। আমার হাতে তার হাতের কোমল স্পর্শে বুকের যন্ত্রণা ভুলে যাই। কিন্তু  একি...! তার চোখে জল কেনো? দুই চোখে অনবরত অশ্রুধারা বয়ে চলেছে তার। আমার জীবনের এই অন্ধকার রাস্তার অন্য প্রান্ত হতে হাতে ফুল নিয়ে হাঁটছিল সে, 'বেলি ফুল'। হাতে তার বেলিফুলের মালা। হয়তো বা তার কোনো বিশেষ প্রিয় মানুষের জন্যই এটা গাঁথা। কে জানে, হয়তো সেই তার  উদ্দেশ্যেই সে কোথাও হাঁটছিল। হয়তো ওই ফুলগুলিও তারই জন্য। আর আমি একধাক্কায় তার সেই সব ফুলগুলো মাটিতে ফেলে দিয়েছি। ছি...ছি... এ আমি কী করেছি! ভুল করেছি আমি। শাস্তিও মাথা পেতে নেব, সে দিলে । ফুলগুলি একটা একটা করে কুড়াতে থাকি আমি, ভাবি জিজ্ঞাসা করি, " আমার এই অন্ধকার রাস্তায় তুমি এই ফুল নিয়ে কী করছো? কাকে দেবে? কে নেবে আমার এই রাত্রি বেলায়?' অবশেষে কিছুই জিজ্ঞাসা করি না, সব ফুলগুলো তাকে দিয়ে দিই। তার হাসিমুখে আমার অন্ধকার ভোরের আকাশে সূর্য দেখা দেয় । হাসিমুখে সে চলে যেতে থাকে। নিস্তব্ধ রাস্তায় আমি দাঁড়িয়ে দেখি তার এক পা, এক পা, করে মিলিয়ে যাওয়া। হঠাৎ দেখি আমার হাতে তখনও একটা ফুল, হ্যাঁ বেলি ফুল! হাতে লেগে ছিল কোথাও, অন্ধকারে ভালো করে দেখিনি, হাতেই লেগেছিল কোথাও । কিন্তু এটাতো আমার ফুল নয়, এটা ওই মেয়েটির ভালোবাসার ফুল। আমি এটা কীভাবে রাখি নিজের বলে, আমি এর অন্যায় অধিকারী হতে পারি না। সে অধিকার আমার নেই, এটা অন্যায়, এটা অনুচিত...। ফিরিয়ে দেব বলে চেঁচিয়ে ডাক দিলাম , " এই বেলিফুল...!! তোমার ফুল নিয়ে যাও!" মুখ তুলে দেখি সে নেই। চলে গেছে। ভাবতে থাকি, " এই ফুল আমার কাছে নষ্ট হয়ে যাবে, এই আগুনে পোড়া জিবনে এই ফুলটাকে কী ভাবে অক্ষত রাখবো আমি, আমি যে এটাকে নষ্টই করে ফেলবো, তুমি এই ফুল নিয়ে যাও... নিয়ে যাও এই ভালোবাসা, নিয়ে যাও... ।" আমার সূর্যদয় হতে হতে হলো না। কালো মেঘে আকাশ সেজে উঠেছে, আঁধার ঘনিয়ে এলো। ফুলটা হাতে নিয়ে ভালো করে দেখতে গিয়ে চোখ থেকে একফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে তাতে মুক্ত বিন্দু হয়ে গেলো। নিমেষে বৃষ্টি নামলো আকাশে। বিদ্যুৎ চমকাতেই দেখি হাতে ধরে থাকা ফুলটায় আমার অশ্রু ফোঁটায় বৃষ্টির ফোঁটা মিশেছে, আর কিছু বোঝা যাচ্ছে না। আর কেউ কিছু কখনো কোনোদিন বুঝতে পারবে না। ধুয়ে গেছে সেই অশ্রু... ধুয়ে যাবে আছে যাকিছু, যতটুকু। তবু চেস্টা। দ্রুত বুকের বাম পাশের পকেটে ফুলটা আলতো করে ধরে রেখে বৃষ্টিতেই হাঁটা দিলাম... বেলিফুল বুকেই হাঁটা দিলাম...। আচমকাই আবারও কে যেনো মাথায় ভেতর থেকে হাতুড়ি দিয়ে ঘা দিল! ”আ...হা..!” বলে চিৎকার করে যন্ত্রণায় চোখ বুজে জ্ঞান হারালাম। চোখ খুলে দেখি বিছানায় আমি... মাথায় তখনও ব্যাথা...।

Tuesday, August 15, 2023

বাঁধন

 



বাঁধন

বাঁধন খুলতে তখনও চোখে জল আসতো। মায়ের আঁচলের বাঁধন। অপু দিবা নিদ্রায় বন্ধুত্ব কখনো করতে পারে নি। এখন নিদ্রা তাকে রাত্রেও একা ছেড়ে দিয়েছে। এখন আঁচল আছে, বাঁধন নেই। সে ভাবে মাকে জিজ্ঞাসা করে, " আচ্ছা মা, তুমি আমাকে আর এখন বেঁধে রাখনা কেনো তোমার আঁচলে?" শোষণ গুণে এ যেন সেই বিশল্যকরনী ... ছেলে বেলায় ঘাম , ভিজে হাত মুখ মাথা আর এখন, চোখের জল গোপনে...আগে ছেড়ে যাওয়ার আকুতি বায়নায় সেই জল...আর এখন

ছেড়ে যাওয়ার আফসোসে। সে জানে, মাও বোঝে... কোথাও বাঁধা পড়লে মা-ই আগে বোঝে। আশ্রয় পায় সেই মমতাময়ী আঁচলে। সে ভাবে, " আমাকে তুমি সারাজীবন বেঁধে রেখো মা, কোথাও নতুন করে বাঁধা পড়তে যাতে না হয়।" 

এখন বাঁধন খুললে চোখে জল আসে...🌧️🌧️🌧️